প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ এবং মৌলিক বিশ্লেষণের মধ্যে পার্থক্য
প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ কীভাবে ব্যবহার করবেন
প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের সুবিধা এবং অসুবিধা
প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ একটি মূল্য পূর্বাভাস পদ্ধতি যা চার্টে প্যাটার্ন সনাক্তকরণ এর সাথে জড়িত। বিশ্লেষকরা বিভিন্ন সরঞ্জাম ব্যবহার করে সহায়ক এবং প্রতিরোধক স্তর, ব্রেকআউট এবং ব্রেকডাউন, প্রবণতা এবং ট্রেডিং সীমা সনাক্ত করতে পারে। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের মূল বিষয়গুলো জানলে, আপনি সম্ভবত কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান নিজ ডিজাইন করা কৌশলে প্রয়োগ করতে পারবেন।
প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ একটি পদ্ধতি যা সময়ের সাথে কোনো সম্পদের মূল্যের পরিবর্তনগুলিকে অনুসরণ করার জন্য ব্যবহৃত হয়। অতীতের মূল্যের গতিবিধি আন্দোলন বিশ্লেষণ ক'রে, এটি ট্রেডারদের কেনা বা বিক্রির জন্য সর্বোত্তম মুহূর্তগুলি বেছে নেওয়ার সুযোগ দেয়। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের এর মৌলিক উপাদানগুলি হ'ল:প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ কী?
বিভাগ মৌলিক বিশ্লেষণ প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ ফোকাস মৌলিক বিশ্লেষণ এমন বিষয়গুলির উপর ফোকাস করে, যেমন একটি দেশ কত পণ্য ও পরিষেবা উৎপন্ন করে (GDP), কত লোক কাজ করেন (কর্মসংস্থানের সংখ্যা), এবং কত দ্রুত দাম বাড়ছে (মূল্যস্ফীতি)। এটি সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যকলাপ এবং বিশ্বজুড়ে ঘটে যাওয়া বড় খবর বা ঘটনাগুলিও বিবেচনা করে। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ চার্ট ব্যবহার করে কারেন্সি পেয়ারগুলি'র মূল্য সময়ের সাথে যেভাবে পরিবর্তিত হয়েছে তা দেখাতে। এটি পুনরাবৃত্তিমূলক প্যাটার্ন খোঁজে, যেমন ধরন বা ট্রেন্ড, যা পরের মূল্য কোথায় যেতে পারে তার পূর্বাভাস পেতে সহায়ক হতে পারে। উদ্দেশ্য উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলির ভিত্তিতে মূল ধারণা হল একটি মুদ্রা খুব ব্যয়বহুল (অতিরিক্ত মূল্যায়িত) বা খুব সস্তা (অবমূল্যায়িত) কিনা তা নির্ধারণ করা। মূল লক্ষ্য হল অতীতে মূল্য কিভাবে পরিবর্তিত হয়েছে তার ভিত্তিতে ভবিষ্যতে মূল্য কোথায় যাবে তা পূর্বাভাস দেওয়া। এটি কেন মূল্য পরিবর্তিত হয় তা ফোকাস করে'না; পরিবর্তন হয় এই বিষয়েই গুরুত্ব দেওয়া হয়। স্বল্প থেকে মাঝারি-মেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি যেসব ট্রেডার দীর্ঘ-মেয়াদি চিন্তা করেন তারা এই ধরনের বিশ্লেষণ ব্যবহার করেন। অর্থনৈতিক পরিবর্তন'গুলি রাতারাতি ঘটে না; সময় নেয়, প্রায়সময়ই মাস বা বছর। এই পদ্ধতি প্রায়ই ব্যবহৃত হয় যেসব ট্রেডার দ্রুত ট্রেড করতে চান, সাধারণত কিছু মিনিট, ঘন্টা বা কিছু ক্ষেত্রে, এক দিনের জন্য। তারা দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক কারণগুলির চেয়ে স্বল্পমেয়াদি মূল্য গতিবিধি নিয়ে বেশি চিন্তিত। উদাহরণ যদি ট্রেডাররা মনে করেন যে একটি দেশে'র অর্থনীতি শক্তিশালী হচ্ছে, তবে তারা এখনই সেই দেশে'র মুদ্রা কিনতে পারেন কারণ তারা বিশ্বাস করেন এটি ভবিষ্যতে আরও মূল্যবান হবে। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষকরা বিশেষ সরঞ্জাম এবং প্যাটার্ন যেমন হেড অ্যান্ড শোল্ডারস (একটি চার্টে নির্দিষ্ট ধরন) বা মুভিং এভারেজ (যা মূল্য পরিবর্তনকে মসৃণ করে) ব্যবহার করেন কোনো মুদ্রা কখন কিনবেন বা বিক্রি করবেন তা নির্ধারণ করতে। এই আর্টিকেলে মৌলিক বিশ্লেষণ সম্পর্কে আরও পড়ুন: ‘মৌলিক বিশ্লেষণ এবং অর্থনৈতিক ইন্ডিকেটর’।প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ এবং মৌলিক বিশ্লেষণের মধ্যে পার্থক্য
প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের প্রধান অনুমানগুলির মধ্যে রয়েছে: সবকিছু মূল্যে অন্তর্ভুক্ত। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষকরা বিশ্বাস করেন যে একটি সম্পদের প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্য ইতোমধ্যে তার মূল্য এবং লেনদেনের পরিমাণে প্রতিফলিত হয় (কতবার কেনা হয়েছে)। ফলে, তারা খবর বা কোম্পানির মৌলিক বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে সংখ্যা এবং চার্টের দিকে মনোযোগ দেন। মূল্যগুলি ট্রেন্ড অনুসরণ করে। ট্রেডাররা মনে করেন যে মূল্য সাধারণত কোনো প্যাটার্নে চলাচল করে, যেমন উপর, নিচে বা একই থাকে। তারা এই ট্রেন্ডগুলি চিহ্নিত করার চেষ্টা করেন এবং সেগুলোর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ট্রেড করেন। ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটে। মানুষ বিশ্বাস করে যে অতীত ঘটনার মাধ্যমে ভবিষ্যতে কী হতে পারে তা অনুমান করা যায়। তারা অতীতের মূল্য চলাচল এবং ধারণাগুলি দেখে ভবিষ্যতের মূল্য অনুমান করার চেষ্টা করেন। অনুভূতি গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষকরা মনে করেন যে ভয় এবং উত্তেজনার মতো অনুভূতি মানুষ কীভাবে কেনাকাটা এবং বিক্রি করে তা প্রভাবিত করে। এই অনুভূতিগুলি বাজারে এমন ধরন তৈরি করতে পারে যা তারা তাদের সুবিধার জন্য ব্যবহার করতে পারে। বাজার দ্রুত প্রতিক্রিয়া করে। ট্রেডাররা বিশ্বাস করেন যে বাজার সাধারণত নতুন তথ্যের জন্য দ্রুত প্রতিক্রিয়া করে, ফলে মানুষ যা জানে তার ভিত্তিতে মূল্য দ্রুত পরিবর্তিত হয়। এই সমস্ত ধারণা ট্রেডারদের বিভিন্ন ইন্সট্রুমেন্ট এবং কৌশল ব্যবহার ক'রে বাজারে মুদ্রা কেনা বা বিক্রি করার ভালো সময় খুঁজে পেতে সহায়তা করে।প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের অনুমানসমূহ
পেশাদার বিশ্লেষকরা প্রায়ই বিভিন্ন গবেষণা পদ্ধতির সংমিশ্রণ ব্যবহার করেন, তারা সাধারণ ট্রেডারদের মতো শুধুমাত্র মূল্যতালিকার দিকে তাকান না। তারা বাজারকে আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি সংযুক্ত করেন। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ যে কোনও সম্পদের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে যার কেনা এবং বিক্রির একটি ইতিহাস আছে। এটি দ্রুত পরিবর্তিত বাজারে বিশেষভাবে জনপ্রিয়, যেমন ফরেক্স (বৈদেশিক বিনিময়), যেখানে মানুষ বিভিন্ন মুদ্রায় ট্রেড করে। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের পিছনের মূল ধারণা হ'ল একটি সম্পদের মূল্য কীভাবে পরিবর্তিত হবে তা পূর্বানুমান করা কেনার প্রাপ্যতা (সরবরাহ) এবং লোকেরা এটি কতটা কিনতে চায় (চাহিদা) এর উপর ভিত্তি করে। কেউ এটিকে মূল্যের পরিবর্তনগুলিতে এই শক্তিগুলির প্রকাশ বোঝার উপায় হিসাবে মনে করে। যেখানে বেশি মনোযোগ মূল্যের পরিবর্তনের দিকে থাকে, কিছু বিশ্লেষক অন্যান্য সংখ্যাতেও তাকান। উদাহরণস্বরূপ, শেয়ার বাজারে তারা বিবেচনা করতে পারেন কত শেয়ার ট্রেড করা হচ্ছে বা কত কনট্র্যাক্ট খোলা আছে। এই অতিরিক্ত তথ্য তাদের ভবিষ্যতে মূল্য কোথায় যেতে পারে তা আরও ভালোভাবে পূর্বানুমান করতে সহায়তা করে। নিচে, আমরা প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের মূল উপকরণগুলি বিবেচনা করব। একটি চার্ট হ'ল নির্ধারিত টাইমফ্রেমের মধ্যে মূল্যের পরিবর্তনের একটি গ্রাফিক উপস্থাপনা। প্রায় সমস্ত ট্রেডিং প্লাটফর্মে, আপনি ক্যান্ডেলস্টিক, বার এবং লাইন চার্টের ধরন পাবেন। এই তিনটি একই ডেটার উপর ভিত্তি করে তৈরি তবে বিভিন্নভাবে প্রদর্শিত হয়।প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ কীভাবে ব্যবহার করবেন
চার্ট
তবে, মনে রাখবেন যে উপরে বর্ণিত সমস্ত চার্ট শুধুমাত্র বিড প্রাইস প্রদর্শন করে, এবং আপনি কোনো নির্দিষ্ট মুহূর্তে আস্ক প্রাইস কোথায় ছিল তা চিহ্নিত করতে তাদের উপর নির্ভর করা উচিত নয়।
টাইমফ্রেম
টাইমফ্রেম প্রতিটি ক্যান্ডেলস্টিক বা বার সম্পন্ন করতে যে পরিমাণ সময় লাগে এবং এর মধ্যে কতটা তথ্য অন্তর্ভুক্ত হয় তা বোঝায়। উদাহরণস্বরূপ, H1 টাইমফ্রেম দেখায় যে এক ঘণ্টার মধ্যে বিড প্রাইস কতটা উঠানামা করেছে। আপনি আপনার ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মের প্রতিটি চার্টে টাইমফ্রেম কাস্টমাইজ করতে পারেন।
সাধারণত, ছোট টাইমফ্রেম অধিক সংকেত উৎপন্ন করে বলে মনে করা হয়। তবে, এর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ভুল প্রমাণিত হয়। অন্যদিকে, দীর্ঘ টাইমফ্রেম আপেক্ষিকভাবে কম সংকেত দিতে পারে, কিন্তু তারা একটি নির্দিষ্ট ট্রেন্ডের জন্য বেশি শক্তিশালী এবং উল্লেখযোগ্য হবে।
এখানে দেখুন কীভাবে একই মূল্যের তথ্য আপনি যখন সময়সীমা পরিবর্তন করেন তখন কীভাবে প্রদর্শিত হয়:
ট্রেন্ড
বাজারের ট্রেন্ড এবং দিকনির্দেশ চিহ্নিত করা প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের মৌলিক কৌশলগুলির মধ্যে একটি। কখনও কখনও, শুধুমাত্র চার্ট দেখে তা নির্ধারণ করা যেতে পারে। অন্যান্য ক্ষেত্রে মূল্যের তথ্যের একটি গভীর বিশ্লেষণ প্রয়োজন হবে।
বাজারের ট্রেন্ডের দুটি প্রধান ধরন রয়েছে:
- আপট্রেন্ড—একটি ক্রমবর্ধমান উচ্চ এবং নিম্নের একটি সিরিজ;
- ডাউনট্রেন্ড—একটি চার্টে ক্রমবর্ধমান নিম্ন নিম্নের এবং নিম্ন উচ্চের একটি সিরিজ।
কোনো নির্দিষ্ট দিকনির্দেশনার অভাবকে অভ্যন্তরীণ বা অনুভূমিক ট্রেন্ড বলা হয়।
একটি ট্রেন্ড চিহ্নিত করতে আপনি সাধারণত একটি সোজা লাইন আঁকতে পারেন যা চার্টের দিকের মূল্য চলাচল নির্দেশ করে। প্রায় প্রতিটি ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মেই ট্রেন্ড লাইন পাওয়া যায় এবং এটি প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যবহারে সহজ প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ সরঞ্জামগুলির একটি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। অন্য একটি বিকল্প হ'ল একটি প্রযুক্তিগত ইন্ডিকেটর যা চার্টের সাথে যুক্ত করলে একটি ট্রেন্ড চিহ্নিত এবং প্রদর্শন করতে পারে।
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল খুঁজে বের করা আপনাকে নির্ধারণ করতে সাহায্য করে কখন এবং কোন দিকনির্দেশে একটি পজিশন খোলা উচিত এবং সম্ভাব্য লাভ বা ক্ষতি কী হতে পারে। সাপোর্ট হ'ল সেই মূল্যের লেভের যেখানে কোনো সম্পদ নিচে নামতে বাঁধার সম্মুখীন হয়, এবং রেজিস্ট্যান্স হ'ল সেই লেভেল যা নির্দেশ করে যেখানে পেয়ার বা জোড়াটি উপরে উঠতে বাঁধা পায়। কিন্তু, এই লেভেলগুলি সবসময় অটুট থাকে না, এবং কখনও কখনও এক দিকে অপর দিকে ব্রেকআউট বা ব্রেকডাউন ঘটে।
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল একটি ট্রেডিং রেঞ্জ তৈরি করে—একটি অনুভূমিক করিডোর যেখানে একটি টাইমফ্রেমের এর মধ্যে মূল্য ওঠানামা করতে থাকে।
একটি মূল্যের গতিবিধি যখন চিহ্নিত রেজিস্ট্যান্স লেভেল পেরিয়ে যায় তখন তাকে ব্রেকআউট বলা হয়। এর বিপরীতে বিয়ারিশ দিকে যখন একই প্রক্রিয়া সংঘটিত হয় তখন তাকে ব্রেকডাউন বলা হয়—একটি দামের চিহ্নিত সাপোর্ট লেভেল থেকে নিচে চলে যাওয়া। উভয় ব্রেকআউট এবং ব্রেকডাউন সাধারণত ভোলাটিলিটি বৃদ্ধির পরে ঘটে।
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স চিহ্নিত করতে, আপনি সাধারণত অতীতে যে লেভেলে দাম উপরে উঠতে এবং নিচে নামতে বাঁধা পেয়েছিল সেই লেভেলগুলি চিহ্নিত করতে পারেন। বিভিন্ন প্রযুক্তিগত ইন্ডিকেটর (যেমন: ফিবোনাচ্চি অথবা পিভট পয়েন্ট) স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্টের উপর লেভেল চিহ্নিত করতে এবং আঁকতে পারে।
চার্ট প্যাটার্ন
একটি চার্ট প্যাটার্ন একটি নির্দিষ্ট গঠন যা মূল্যের গতিবিধির ভবিষ্যতের পূর্বাভাস দেয় বা একটি কেনা বা বিক্রির সংকেত তৈরি করে। তত্ত্বটি পূর্বে পর্যবেক্ষণ করা কিছু নির্দিষ্ট প্যাটার্ন বর্তমান মূল্য কোথায় যাচ্ছে তা নির্দেশ করে, এই অনুমানের ভিত্তিতে গঠিত।
- হেড অ্যান্ড শোল্ডারস সর্বাধিক নির্ভরযোগ্য চার্ট প্যাটার্নগুলির মধ্যে একটি বলে বিবেচিত হয়, যা ট্রেন্ড পরিবর্তনের নির্দেশ দেয়। এই প্যাটার্নের দুটি ধরন আছে—হেড অ্যান্ড শোল্ডারস টপ, যা দেখায় যে ঊর্ধ্বমুখী গতিবিধি শীঘ্রই শেষ হতে পারে এবং হেড অ্যান্ড শোল্ডারস বটম, যা নির্দেশ করে যে নিম্নমুখী গতিবিধি পরিবর্তিত হয়ে বিপরীতমুখী হতে যাচ্ছে।
- ডোজি একটি ক্যান্ডেলস্টিক যার শরীর ছোট (যার অর্থ হল যে ক্যান্ডেল প্রায় একই দামে খোলে এবং বন্ধ হয়) এবং উভয় পাশে তুলনামূলক দীর্ঘ উইকের সাথে গঠিত হয় যা একটি টাইমফ্রেমের মধ্যে বাজারের ভোলাটিলিটি দেখায়। ডোজি সাধারণত বাজারের দ্বিধার সংকেত দেয় কারণ কোনো বুলিশ বা বিয়ারিশ ট্রেন্ড প্রাধান্য পায় না।
- বুলিশ হ্যামার একটি ক্যান্ডেলস্টিক যা সাধারণত নিম্নমুখী ট্রেন্ডের পরিবর্তনের ফলে দেখা যায়। এই ক্যান্ডেলস্টিকের উইকগুলি শরীরের দ্বিগুণ লম্বা হতে হবে।
- হ্যাংগিং ম্যান হলো বুলিশ হ্যামারের-এর বিয়ারিশ সমকক্ষ যার শরীর ছোট এবং দীর্ঘ উইক্স থাকে এবং সাধারণত ঊর্ধ্বমুখী ট্রেন্ড বিপরীতমুখী যাওয়ার আগে দেখতে পাওয়া যায়।
- অন্য একটি জনপ্রিয় চার্টের ধরন হলো ট্রায়েঙ্গেল। ট্রায়েঙ্গেলের তিনটি ধরন রয়েছে: সিমেট্রিক্যাল, অ্যাসেন্ডিং এবং ডিসেন্ডিং। সিমেট্রিক্যাল ট্রায়েঙ্গেল একটি ধরন যেখানে দুটি ট্রেন্ড লাইন এক বিন্দুতে মিলিত হয়, এবং কোনটিই সমতল নয়। এটি সাধারণত বর্তমান ট্রেন্ডের দিকনির্দেশ নিশ্চিত করে। অ্যাসেন্ডিং ট্রায়েঙ্গেল, উপরের ট্রেন্ড লাইনটি সমতল এবং নিচেরটি উপরের দিকে যাচ্ছে। এই ধরনটি বুলিশ হিসাবে বিবেচিত হয় এবং এটি ব্রেকআউটের পূর্বাভাস দিতে পারে। ডিসেন্ডিং ট্রায়েঙ্গেল একটি সমতল নিচের রেখা থাকে এবং উপরের ট্রেন্ড লাইন হয় ডিসেন্ডিং বা নিম্নগামী ধরনের। এটি একটি বিয়ারিশ ধরন, পরবর্তী ব্রেকডাউন নির্দেশ করে।
ইন্ডিকেটর
যে ট্যুলটি ট্রেন্ড, প্যাটার্ন, সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল বা কেনা এবং বিক্রির সংকেতের পূর্বাভাস বা নিশ্চিত করতে অনুমতি দেয় সেটি হলো একটি প্রযুক্তিগত ইন্ডিকেটর। এটি আপনার ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম এর জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা সফটওয়্যার যা মূল্যের পরিবর্তন এবং ভোলাটিলিটিকে ভিত্তি ক'রে গণনা করে। উভয় OctaTrader এবং MT4 বা MT5 একটি বিস্তৃত পূর্বপ্রস্তুত ইন্ডিকেটর উপলব্ধ আছে, তবে আপনি সর্বদা একটি কাস্টম ডাউনলোড করতে বা এমনকি এটি নিজেই তৈরি করতে পারেন।
কেবল একটি মূল্য চার্টে একটি ইন্ডিকেটর যোগ করা আপনার বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বোঝার ক্ষমতাকে খুব বাড়িয়ে দিতে পারে এবং আপনাকে কোন দিকনির্দেশে ট্রেড করতে হবে তা নির্ধারণ করতে সাহায্য করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ফিবোনাচ্চি বা পিভট পয়েন্টের এর মতো ইন্ডিকেটরগুলি সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল শনাক্ত করতে সহায়ক হতে পারে। গতিবিধি সম্পর্কিত ইন্ডিকেটরগুলি আপনাকে মূল্য পরিবর্তনের হার পরিমাপ করতে সাহায্য করবে এবং Zig Zag ব্যবহার করা যেতে পারে এটি অনুমান করতে কখন ট্রেন্ড পরিবর্তনের সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
ইন্ডিকেটরগুলি কীভাবে ইনস্টল এবং কাস্টমাইজ করা যায় তা শিখতে, দয়া করে আমাদের ম্যানুয়াল বিভাগে MT4 বা MT5 এর জন্য নির্দেশনা দেখুন।
প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের সুবিধাগুলি নিচে দেওয়া হল: বাজারের ট্রেন্ড বিশ্লেষণ। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ ট্রেডারদেরকে অতীতের দাম এবং ট্রেডিং ভলিউম দেখে মার্কেটের গতিপথ বুঝতে সাহায্য করে। তারা ট্রেন্ডের চিহ্ন দেখতে পারে, যেমন কখন দাম বাড়ে (উর্ধ্বমুখী ট্রেন্ড) বা কখন কমে (নিম্নমুখী ট্রেন্ড)। যদি দাম দিক পরিবর্তন শুরু করে, তা রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী পরিবর্তন নামে পরিচিত। বিশ্বাসযোগ্য ইন্ডিকেটর। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের বিশেষ সরঞ্জাম, যেমন মুভিং এভারেজে এবং RSI (রিলেটিভ স্ট্রেংথ ইনডেক্স), ট্রেডারদেরকে কখন কেনা বা বিক্রি করতে হবে তা বোঝাতে সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ, যদি MACD এক্সওভার দেখায়, এটি ট্রেড করার সময় হতে পারে। এন্ট্রি এবং এক্সিট পয়েন্ট। এই পদ্ধতি ট্রেডারদেরকে একটি ট্রেন্ডে ঢোকার বা লাভ করা হলে বেরিয়ে যাওয়ার ভালো মুহূর্তগুলো খুঁজে পেতে সহায়তা করে। তারা নির্দিষ্ট মূল্য স্তর খুঁজে যেখানে তারা বিশ্বাস করে ট্রেন্ড পরিবর্তিত হবে, যেমন একটি রেজিস্ট্যান্স লেভেল ভেঙে যাওয়া। বৈচিত্র্যময় বিশ্লেষণের সম্ভার। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ অনেক ট্যুলস প্রদান করে যাতে ট্রেডাররা তাদের জন্য যেটি সেরা কাজ করে তা বেছে নিতে পারেন। কেউ কেউ ছোট টাইমফ্রেমের সাথে দ্রুত ট্রেড করতে পছন্দ করে, অন্যেরা দীর্ঘমেয়াদী ট্রেন্ডগুলি দেখতে পছন্দ করে। লক্ষ্য স্থাপন এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা। ট্রেডাররা যে পরিমাণ ক্ষতি গ্রহণ করতে প্রস্তুত তা সীমিত করতে পারে (স্টপ-লস লেভেল) এবং কখন টেক প্রফিট নিতে হবে তার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এটি তাদের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা করতে সহায়তা করে এবং কখন ট্রেড থেকে বের হওয়া উচিত তা জানাতে সহায়তা করে। বাজারের মনস্তত্ত্ব বোঝা। এই বিশ্লেষণটি ভয় এবং লোভের মতো আবেগ কীভাবে মূল্যে প্রভাব ফেলে তা দেখতে সহায়তা করে। উদাহরণস্বরূপ, যদি দাম দ্রুত বাড়ে, এটা মানে হতে পারে যে মানুষ লোভী হচ্ছে, যা পরে একটি পতনের দিকে নিয়ে যেতে পারে। প্রাথমিক সংকেত শনাক্তকরণ। মূল্য ট্রেন্ড ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করে, ট্রেডাররা বেশিরভাগের আগে পরিবর্তন দেখতে পারেন। যদি তারা লক্ষ করে যে একটি ট্রেন্ড পরিবর্তিত হবে, তারা আগেভাগেই প্রবেশ করতে পারেন এবং সম্ভবত বেশি লাভ করতে পারেন। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের অসুবিধাগুলি নিম্নরূপ: অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কারণ অগ্রাহ্য করা। ফরেক্স-এ প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ মূলত মূল্য ও ট্রেডিং ডেটার উপর মনোনিবেশ করে, তা জরুরি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ঘটনাকে আমলে নেয়না যা মুদ্রার মানে প্রভাব ফেলতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, একটি মুদ্রা চার্টে অবমূল্যায়িত হিসেবে দেখা যেতে পাতে, কিন্তু আকস্মিক সংবাদ যেমন সুদের হার পরিবর্তন বা রাজনৈতিক অস্থিরতা তার কদর আরও কমিয়ে দিতে পারে, প্রযুক্তিগত সংকেতের পরোয়া না করে। একই প্যাটার্নের পৃথক ব্যাখ্যা। বিশ্লেষকরা চার্টগুলোকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করতে পারেন, যা বিভ্রান্তিকর হতে পারে। একজন ভাবতে পারেন একটি প্যাটার্ন কোনো কেনার সংকেত দেয়, অপরজন মনে করেন বিক্রির সংকেত দেয়। কেবল একটি ব্যক্তিকে বিশ্বাস করার পরিবর্তে একাধিক মতামত নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। ধীর প্রতিক্রিয়া। প্রযুক্তিগত ইন্ডিকেটরগুলি প্রায়ই অতীতের ডেটার উপর নির্ভর করে, তাই তারা ট্রেন্ডের পরিবর্তন দেখাতে ধীর হতে পারে। যখন আপনি কেনা বা বিক্রির সংকেত দেখেন, তখন সেরা সুযোগটি ইতোমধ্যেই চলে যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, কিছু ইন্ডিকেটর আপনাকে খুব দেরিতে কাজ করতে বলে, যার ফলে আপনি সুযোগ হারাতে পারেন বা এমনকি টাকা হারাতে পারেন। মিথ্যা সংকেত। কখনও কখনও, প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ এমন সংকেত দেয় যা সঠিক প্রমাণিত হয় না। একটি প্যাটার্ন পরামর্শ দেয় যে দাম বাড়বে, কিন্তু তারপর তা কমে যায়। এটি ট্রেডারদের জন্য হৃদয়বিদারক হতে পারে যারা সংকেত অনুসরণ করেছেন। ব্যক্তিগত ব্যাখ্যা। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ প্যাটার্ন এবং চার্টের উপর নির্ভরশীল হওয়ায়, বিভিন্ন বিশ্লেষকরা বাজারে কী ঘটছে তার উপর ভিন্ন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেন। একজন ব্যক্তির জন্য যা কেনার একটি ভালো সুযোগের মতো মনে হয়, তা অন্যের জন্য খারাপ ধারণা হতে পারে। অতীত সর্বদা ভবিষ্যৎ অনুমান করতে পারে না। শুধুমাত্র অতীতে একটি ট্রেন্ড কাজ করেছে মানেই আবার কাজ করবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। বাজারগুলি ক্রমাগত পরিবর্তিত হয়, তাই ঐতিহাসিক প্যাটার্নগুলির উপর অত্যধিক নির্ভর করা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। যা বছরখান আগে কাজ করেছিল তা আজকে কাজ নাও করতে পারে।প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের সুবিধা এবং অসুবিধা
চূড়ান্ত ভাবনা